সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ০৭:৩৩ পূর্বাহ্ন

‘ইউএনও এসিল্যান্ড কী খায় আমি দেখব’ আ’লীগ নেতার হুমকি

‘ইউএনও এসিল্যান্ড কী খায় আমি দেখব’ আ’লীগ নেতার হুমকি

অনলাইন ডেস্ক:

বরগুনার বেতাগী পৌর শহরের অস্থায়ী বাজারে অতিরিক্ত মূল্যে ও কেজিপ্রতি তরমুজ বিক্রির অভিযোগে মোবাইল কোর্ট চলাকালীন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (এসিল্যান্ড) ও এক আওয়ামী লীগ নেতার তর্কবিতর্ক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

আওয়ামী লীগ নেতা মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে নিষেধ করেন এবং কড়া হুশিয়ারি দিয়ে বলেন- ভ্রাম্যমাণ আদালতে যদি জরিমানা করা হয়, তবে বেতাগী বাজার বন্ধ থাকবে ‘দেখবো ইউএনও আর এসিল্যান্ড কী খায়।’

ওই আওয়ামী লীগ নেতা বেতাগী সদর ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম। তবে বিগত দিনে তিনি মাদক মামলার কারণে চেয়ারম্যান পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত হন।

জানা যায়, সারা দেশের ন্যায় বেতাগীর তরমুজের বাজারও সিন্ডিকেটের দখলে। বেশ কয়েকটি হাত ঘুরে বৃদ্ধি করা হয় প্রতিটি তরমুজের মূল্য, বিক্রি হয় কেজি দরে। এতে সিন্ডিকেট চক্র লাভবান হলেও সাধারণ কৃষকদের কোনো সুফল দিচ্ছে না।

বেশ কিছুদিন ধরে সারা দেশে এ সিন্ডিকেটদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা হচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় বেতাগীতেও নানা অভিযোগের ভিত্তিতে শনিবার থেকে মোবাইল কোর্ট নিয়ে মাঠে নামেন বেতাগী উপজেলা প্রশাসন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন মোসা. ফারহানা ইয়াসমীন।

শনিবার (০২ মে ) দুপুরে বেতাগী পৌরশহরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করার সময় আওয়ামী লীগ নেতা নজরুলের তোপের মুখে পড়েন তিনি; যা সেই থেকে একটি ২ মিনিট ১৭ সেকেন্ডের ভিডিওতে স্পষ্ট।

ভিডিওতে ওই নেতা ম্যাজিস্ট্রেটকে বলেন, কী কারণে জরিমানা করবেন, কেন করবেন, পেয়েছেন কী? আপনারা সরকারি চাকরি করেন, জরিমানা আপানারা দিয়ে দেন। যদি জরিমানা করা হয় তবে বেতাগীর মাছ বাজার, তরকারি বাজার, সব বন্ধ করে দেওয়া হবে। দেখব ইউএনও আর এসিল্যান্ড কী খায়। করেন আপনি কত টাকা জরিমানা করবেন? করেন। এই বলে ম্যাজিস্ট্রেটকে কড়া হুশিয়ারি দেন আওয়ামী লীগ নেতা নজরুল।

পৌর শহরের তরমুজ বিক্রেতা সুজন ও হেলাল বলেন, ১০০ তরমুজ ১৫ হাজার টাকা দিয়ে ক্রয় করতে হয়। এরপর যদি এমন বাধা দেওয়া হয় তবে লাভ করব কেমন করে। তাছাড়া সারা দেশেই তো কেজি দরে তরমুজ বিক্রি হচ্ছে।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (এসিল্যান্ড) মোসা. ফারহানা ইয়াসমীন বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালতে বাধা দেয়া এটিও বড় ধরনের অপরাধ। একজন জনপ্রতিনিধি হয়ে এ ধরনের আচরণ সত্যিই অশোভনীয়।

তিনি বলেন, আমরা অভিযোগ পেয়ে বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেছি। ক্রয়মূল্য তালিকা ও বিক্রয়মূল্য তালিকা দেখতে চেয়েছি; তাতেই ওই আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান আমার সঙ্গে বিতর্ক শুরু করে দেন। এমন হলে রাষ্ট্রীয় কাজ পরিচালনায় বিড়ম্বনা পোহাতে হবে। বিষয়টি ইউএনওর মাধ্যমে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি।

এমন সব অভিযোগ ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ভিডিও সম্পর্কে ওই আওয়ামী লীগ নেতা নজরুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া যায় না? আমি যা বলার বলে দিয়েছি এ নিয়ে আমি আর কিছু বলব না। বোঝেন কী? নিউজ করলে জেল ফাঁস হবে।

এ ব্যাপারে বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সুহৃদ সালেহীন বলেন, একজন প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তার সঙ্গে জনপ্রতিনিধি হয়ে এমন আচরণ তার ঠিক হয়নি। আমি জানতে চাইলে তিনি মৌখিকভাবে ক্ষমা চেয়েছেন। তবে তার বিরুদ্ধে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সূত্র : যুগান্তর

Print Friendly, PDF & Email

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




Archive Calendar

Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031  




All rights reserved@KathaliaBarta 2023
Design By Rana